যশোরে ঝিকরগাছায় মাচায় তরমুজ চাষে সফল উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান

সফল উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান। ছবি: দৈনিক শেষের ডাক

মোঃ ইমরান হোসেন হৃদয়, শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছায় লাভের আশায় মাচায় গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ চাষ করে সাড়া ফেলেছেন উচ্চশিক্ষিত যুবক ও কৃষি উদ্যোক্তা কামরুজ্জামান।

তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামের নবীছ উদ্দিনের ছেলে। কামরুজ্জামান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর খুলনা আঞ্চলিক অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা। পেশায় তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হলেও জেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বর্ষাকালীন থাইল্যান্ড ব্ল্যাকডন জাতের তরমুজ চাষ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাচায় ঝুলে থাকা তরমুজ যাতে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য লাল জালি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমাচ্ছেন কামরুজ্জামান এর তরমুজ বাগানে। তার তরমুজ চাষ দেখে অন্য কৃষকরাও এ চাষে ঝুঁকছেন।

কৃষি উদ্যোক্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, চাকরির পাশাপাশি শখের বসে কৃষিকাজ করি। তারই ধারাবাহিকতায় আমি প্রথমে ইউটিউব দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হই। এরপর খুলনা মা মনি সিডস থেকে বীজ সংগ্রহ করে বিশ শতক জমিতে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষ শুরু করি। অল্প পরিশ্রমে বেশি ফলন ও ভালো দাম পেয়ে এ চাষে আমার আগ্রহ আরও বেড়েছে। তরমুজ চাষে সার, কীটনাশক, সেচ, বাঁশ, সুতা ও লেবার খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা।

ইতোমধ্যে তিনি ৫০০ কেজি তরমুজ বাজারজাত করেছেন ১৬ হাজার টাকা মণ দরে। কালো রঙের তরমুজের ওজন গড়ে দুই কেজি থেকে তিন কেজি হয়। সাইজে ছোট এবং সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় এর চাহিদা খুব বেশি। এই তরমুজ খেতে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। তরমুজ ছাড়াও তিনি করলা, বেগুন, কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি চাষ করছেন। এছাড়াও তিনি বাড়ির পাশে বস্তায় আদা চাষ করে ইতোমধ্যে মানুষের নজর কেড়েছেন।

পানিসারা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অর্ধেন্দু পাঁড়ে জানান, তরমুজ চাষি কামরুজ্জামান কে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। তবে কৃষি ক্ষেত্রে আর্থিক সহযোগিতা ও কৃষি প্রণোদনা তিনি পাননি।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এই উপজেলাতে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে ব্ল্যাক গোল্ড হাইব্রিড জাতের রঙিন তরমুজ চাষ হচ্ছে। কিছুদিন আগে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে তরমুজ চাষে একটু সমস্যা হয়েছিল। তবে এ উপজেলায় বেলে-দোঁয়াশ মাটি হওয়ার কারণে খুব একটা অসুবিধা হয়নি। এ উপজেলায় তরমুজ চাষে যে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশা করা হয়েছিল তার কোন ঘাটতি হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *