বাসায় হোমমেড কেক বানিয়ে সফল নারী উদ্যোক্ত ইশরাত জাহান শাম্মী

মো:সৌরব, বেতাগী প্রতিনিধি :

ইশরাত জাহান শাম্মী এগিয়ে যাওয়ার সেই সুন্দর গল্পটি নিজের মুখেই জানালেন। জেনে নেওয়া যাক তার সংগ্রামের গল্প-

‘আমি শাম্মী একজন গৃহিণী। পড়াশোনা করছি মাস্টার্স, রাষ্ট্রবিজ্ঞান  নিয়ে মাগুরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি আমার ছোট একটি অনলাইন বিজনেস রয়েছে। যেখানে আমি সাধারণত হোমমেড কেক ও পিজ্জা তৈরি করে সেল করে থাকি।

নারীরা আজ আত্মনির্ভরশীল। আর সেটা প্রমাণ করার জন্যই আমার এই ছোট উদ্যোগ। শুধু একজন সফল গৃহিণী ও মা হিসেবে নয় পাশাপাশি নিজেকে দেখতে চেয়েছি একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে।

খুব অল্প বয়সেই বিয়ে হয়ে যায় আমার। সেইসঙ্গে খুব তাড়াতাড়িই প্রথম বেবি কনসিভ করি। অল্প বয়সেই সংসারের সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছিলাম খুব সহজেই। কিন্তু ঘর সামলানোর পাশাপাশি নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে চেয়েছিলাম সব সময়। যেহেতু ঘর আর ছোট বাচ্চা সামলানোর পাশাপাশি বাইরে গিয়ে কিছু করা আমার পক্ষে তেমন সম্ভব হচ্ছিল না তাই চিন্তা করলাম ঘরে বসেই কিছু করার।

আমি নানা রকম মজাদার রান্না করতে বেশ পছন্দ করি। এছাড়া আমার ছেলে রাগীব কেক খেতে বেশ পছন্দ করে। তাই হরেক রকমের কেকও বানাতাম ঘরের সবার জন্য। আমার কেক খেতে সবাই খুব পছন্দ করতেন এবং প্রশংসাও করতেন। সে থেকেই মাথায় আসল আমি আমার রান্নার স্কিলকে কাজে লাগিয়ে একটি অনলাইন হোমমেড কেক সার্ভিস খুলতে পারি। এর ফলে যারা বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পছন্দ করেন না এবং হোমমেড স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খুঁজে থাকেন তাদের জন্যও উপকারী এবং আমার জন্য বেশ সহজ ও আনন্দময়ী একটি কাজ হবে।

স্বাবলম্বী হওয়ার সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০২৩ সালে এপ্রিল মাসে  শুরু করি আমার একটু একটু করে পথচলা। Israt jahan Shammi Shop নামক একটি অনলাইন পেজ খোলার মাধ্যমেই আমার বিজনেসের প্রথম যাত্রা শুরু হয়। পেজ খোলার পর আমার রান্নার ও কেকের নানা রকম ছবি আমি শেয়ার করতে থাকি। কিছুদিন পরেই অর্ডার চলে আসতে থাকে। এত স্বল্প সময়ে এত সারা পাব আমি কখনো ভেবে উঠতে পারিনি। আমার প্রথম কাস্টমার ছিলেন আমারই প্রতিবেশী এক ভাবি।

আমার এই কাজে আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছে আমার পরিবার। তারা আমাকে উৎসাহ দেয় আমার কাজকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য। বিজনেস শুরু করার আগে তাদের উৎসাহে আমি ছোট একটি কেক বানানোর ওপর কোর্সও করে থাকি। তারা আমার পাশে না থাকলে আমি সাহস পেতাম না এত দূর এগিয়ে যাওয়ার।

সবাই যেহেতু আমার পাশে ছিল তাই আলহামদুলিল্লাহ বিজনেসে আমার তেমন কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। 

আব্বু-আম্মুর দোয়া ও আমার কাস্টমারদের সাপোর্ট, ভালোবাসায় এখন আমি স্বাবলম্বী। এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা। এখন আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা একটাই আমার এই হোমমেড কেক বিজনেজের সঙ্গে আমার এই নতুন উদ্যোগটিকে অনেক দূর নিয়ে যাওয়া। শেখার কোনো শেষ নেই, তাই শিখতে চাই আরো অনেক কিছু।’

ষষ্ঠম শ্রেণীতে পড়া শিক্ষার্থী অনন্যা জামান বলে, আমি বাহিরে একটা দোকান থেকে ও কেক খেয়েছে এবং সাম্মি আপার থেকেও খেয়েছি তো স্বামী আপুর কেকের গুনগত মান আমার কাছে একটু বেশি ভালো মনে হয়েছে, কারণ আমার যা মনে হয় সাম্মি আপা কেকে কোনরকম ভেজালমুক্ত রং বা কেমিক্যাল মিশায় না, যার কারণে তার কেক খেতে এতটা সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত,এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আশিক বলেন,কিছুদিন আগে জন্মদিনের জন্য শাম্মী আপার থেকে একটা কেক আনছিলাম, তার কেকের গুণগতমান ভাল ও ডিজাইন খুবই চমৎকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *