জামালপুরে ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশে হামলা, সাংবাদিকসহ আহত ৩০

আহতসাংবাদিক শহিদুল ইসলাম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের সমাবেশ ও কাউন্সিল অধিবেশনে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় ডেইলি স্টারের সাংবাদিকসহ ৩০ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে উপজেলার তারাকান্দি পোগলদিঘা ডিগ্রী কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, ডেইলি স্টারের জামালপুর প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম নিরব, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের জামালপুর জেলা শাখার সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুব জামান জুয়েল ও সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক শাহরিয়ার সৈকতসহ ৩০ জন নেতা-কর্মী।

আহতদের মধ্যে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম নিরব ও যুব ইউনিয়ন জেলা জেলা কমিটির সভাপতি মাহবুব জামান জুয়েলকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সাংবাদিক নিরবেরসহ ৪টি মোটরসাইকেলটিও নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া হামলাকারীরা বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুরও করে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকালে উপজেলার পোগলদিঘা ডিগ্রী কলেজের অডিটরিয়ামে ছাত্র ইউনিয়ন উপজেলা শাখার সমাবেশ ও কাউন্সিল অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যায় অডিটরিয়ামে অধিবেশন শুরু হলে একদল দুর্বৃত্ত লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে অধিবেশনটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর হামলাকারীরা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীদের কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে লাঠি-সোঁটা দিয়ে মারধর করেন। এতে সাংবাদিকসহ প্রায় ৩০ জন আহত হন।

এ বিষয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র ইউনিয়নের অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহ করার জন্যে দাওয়াত দেয় আমাকে। সংবাদ সংগ্রহের জন্যে আমি ওই কলেজের অডিটরিয়ামে যাচ্ছিলাম। এ সময় রাস্তায় লোকজনকে ছুটাছুটি করতে দেখি। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলাকারীরা আমাকেও মারধর করতে শুরু করে। আমি সংবাদকর্মী পরিচয় দেওয়ার পরও লাঠি দিয়ে আমার মাথায় ও সারা শরীরে আঘাত করে। পরে আমার মোটরসাইকেলটিও তারা নিয়ে যান।

জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রেদোয়ান খন্দকার মাহিন বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার পতনের পর অনেক ছাত্র-ছাত্রী ছাত্র ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকেছে। এর অংশ হিসেবে উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের জমায়েত দেখে এটিকে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠান মনে করে একদল দুষ্কৃতিকারী অতর্কিত হামলা করে। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করেন তারা।

আহত যুব ইউনিয়ন নেতা মাহবুব জামান জুয়েল বলেন, সমাবেশ এবং কাউন্সিল অধিবেশনে বিকাল থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসতে শুরু করে। সন্ধ্যায় কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর পরপরই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অতর্কিত এবং কোন কারন ছাড়াই হমলা করে। এই হামলায় আনুমানিক প্রায় এক দেড়শ বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মী অংশ নেয়। আমি এই হামলায় আহত হই এবং আমার গাড়ীসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন এই যুব নেতা।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. চাঁন মিয়া বলেন, ওই সম্মেলনের বিষয়টি আমাদের অবগত করা হয়নি। হামলার বিষয়টি শুনে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। সাংবাদিকসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমি হাসপাতালে আহত ওই সাংবাদিককে দেখতে গিয়েছিলাম। এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *