খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে ১৫টি ইটভাটা বন্ধ করেছে প্রশাসন৷
সোমবার দিনব্যাপি সদর উপজেলা, দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়,মানিকছড়ি ও গুইমারায় অভিযান চালানো হয়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এখনো অভিযান চলছে। এসময় অবৈধভাবে পরিচালনা করা ১৫টি ভাটাকে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩টি, দীঘিনালায় ২টি, পানছড়িতে ২টি এবং
রামগড়ে ৪টি, গুইমারা ও মানিকছড়িতে ৪টি ইটভাটা বন্ধ ঘোষণার খবর পাওয়া গেছে। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত অভিযান চলছে।
এ সময় খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ বলেন,অবৈধ ভাটায় অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে উপজেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন চন্দ্র রায় বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক অবৈধ ভাটা বন্ধে ভ্ৰাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী দেড় লাখ টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। জরিমানা তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস পানি দিয়ে ইট ভাটার চুল্লির নিভিয়ে দেয়া হয়।এরমধ্যে খাগড়াছড়িতে ৫টি এবং বাকি উপজেলাগুলোতে ১০টি
মোট ১৫টি ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমরা যদি আরও অবৈধ ইটভাটার খোঁজখবর পায়,সেখানেও আমাদের অভিযান কার্যক্রম চলমান থাকবে।
খাগড়াছড়ি ইটভাটা মালিক সমিতির সমন্বয়ক মো. সেলিম বলেন, হাইকোর্টের যে স্থগিতাদেশ রয়েছে তা আমরা এখনো অফিসিয়ালি পায়নি সেটা পেলে আমরা ইটভাটা চালাতে পারব। আমরা পরিবেশ সম্মত ইটভাটা করার পরও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাচ্ছি না। ইটভাটার লাইন্সেস পাচ্ছি না। লাইন্সেস না থাকার কারণে প্রশাসন ভাটা বন্ধ করে দিচ্ছে। লাইন্সেস করার
জন্য যা যা দরকার তা আমরা করব। আমরা লাইন্সেস নিয়ে ভাটা পরিচালনা করতে চায়। এরই মধ্যে প্রতিটি ভাটায় আমরা আড়াই কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়ে গেছে।
খাগড়াছড়ি ইটভাটা মালিক সমিতির কোষাদক্ষ মো. মোস্তফা জানান, আমরা ২০১৫ সাল থেকে ইটভাটার লাইন্সেনের আবেদন করে আসছি। সরকার আমাদের লাইসেন্স না দিলেও প্রতি বছর প্রতিটি ইটভাটা থেকে ভ্যাট বাবদ সাড়ে ৪ টাকা, আয়কর প্রায় ৪৭ হাজার টাকা ও ভূমিকর বাবদ ২৪ হাজার টাকা করে আদায় করে নিচ্ছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার বলেন, ইটভাটা বন্ধ হলে খাগড়াছড়িতে চলমান সকল উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে এবং আগামীতে নতুন কোন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন দুরুহ হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশ মোতাবেক অবৈধ ভাটা বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। অবৈধ সকল ভাটা বন্ধ করা হবে।