সুমন চৌধুরী চট্টগ্রাম (প্রতিনিধি)
জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেছেন,
যুবদলের কোন নেতাকর্মী অনৈতিক কর্মকান্ড, কিংবা অপকর্মে লিপ্ত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা এবং আইনী ব্যবস্থা নেযা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, তিনি বলেন দলে কোন দুস্কৃতিকারীদের ঠাঁই দেওয়া হবে না! দুস্কৃতিকারীদের কোন ঠাঁই নাই এবং ঠাঁই হবে না। জিয়া পরিবার কখনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করেননি। আমরা কখনো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাইনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদি আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের দোসররা কীভাবে পালিয়ে গেছে কিংবা পালাতে গিয়ে ধরা খেয়েছে, তা দেশবাসী দেখেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী শক্তি কিংবা ভয় দেখিয়ে নয়, ইনসাফ এবং উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করুন, তাদের ভালোবাসা অর্জন করুন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের এই নির্দেশনা মেনে বিএনপি ও যুবদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। মানুষের পাশে থেকে একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে। আগামীতে বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে তাদের ভোটে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে যুবদলের প্রতিটি নেতাকর্মী এখন থেকেই যার যার অবস্থান থেকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এমন কোনো কাজ করবে না, যাতে করে জনগণের মনে কষ্ট লাগে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাজার মাইল দূরে বসে বিএনপির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, দল পরিচালনা করছেন। তিনি বিএনপি ও যুবদলকে একটি শক্তিশালী মাঠের সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে চান। বিএনপির রাজনীতিতে যুবদল সবসময় বড় ভূমিকা পালন করে বলে দাবি করেন তিনি। আপনাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। সকলের সাথে ভালো ব্যবহার করে মানুষের মন জয় করতে হবে। কোনো ধরনের অন্যায় কাজে লিপ্ত না হয়ে সকলকে শৃঙ্খলার সাথে থাকতে হবে। যাতে করে যুবদলের কোনো বদনাম না হয়। আমরা যারা যুবদল করি প্রত্যেককে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা আমাদের উপর বিগত দিনে অন্যায় অত্যাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবেন না। আওয়ামী লীগ বহু মানুষকে গুম, হত্যা, খুন এবং বিরোধী দলকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।
দেশ থেকে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এজন্য আওয়ামী লীগের উপর আল্লাহর গজব পড়েছে। তাদের পতন হয়েছে। কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বা অন্যায় করলে তাদের দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবাইকে যার যার পেশায় থেকে নিজ নিজ কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।
আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর), বিকাল ৩ টায় কাজীর দেউরী ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৈষম্যহীন,
নিরাপদ, মানবিক বাংলাদেশ গড়ায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের ভূমিকা শীর্ষক চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুবদলের মতবিনিময় সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদের সভাপতিত্বে উক্ত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সভাপতি সৈয়দ আহমেদ উজ্জ্বল, লক্ষীপুর জেলা যুবদলের আহবায়ক রেজাউল করিম লিটন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহাজাহান, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মো. জসিম, খাগড়াছড়ি জেলা যুবদলের সভাপতি মাহবুবুল আলম সবুজ, ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, বান্দরবান জেলা যুবদলের সভাপতি মো. জহির উদ্দিন মাসুম, রাঙামাটি জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এসএম মুরাদ চৌধুরী, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, কক্সবাজার জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন, লক্ষীপুর জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আব্দুল হালিম হুমায়ূন, বান্দরবান জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, ফেনী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার, এতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় যুবদলের আওতাধীন মহানগর, জেলা, উপজেলা, থানা, পৌরসভার প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, স্বৈরাচার পতন, গণতন্ত্রকামী জনগণের দীর্ঘ আন্দোলনের বিজয়। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। নিকট অতীতে স্বৈরাচার ছিল দৃশ্যমান নিপীড়নকারী আর এখন স্বৈরাচারের দোসররা অদৃশ্য শক্তিরূপে জনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দৃশ্যমান প্রতিপক্ষের চাইতে অদৃশ্য শত্রুরা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। দৃশ্যমান প্রতিপক্ষকে আমরা চিনি, তাদের আক্রমণের ধরনও আমাদের পরিচিত কিন্তু অদৃশ্য শত্রুরা অচেনা আর সর্বত্র, তাদের অবস্থান অন্ধকারে, আর তাদের কৌশলও চোরাগুপ্তা। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন তারেক রহমান। তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন,
তৃণমূল সতর্ক নজরদারি রাখলে কোন ষড়যন্ত্রকারীই দলের সুনাম ক্ষুন্ন করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।
একই সঙ্গে তিনি দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সকল অদৃশ্য ও দৃশ্যমান শক্তিকে প্রতিহত করতে তৃণমূলকে সজাগ, ঐক্যবদ্ধ এবং সর্বোচ্চ সর্তক থাকতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ বলেন, ছবি তোলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, এই ছবি তোলা বন্ধ করতে হবে আমাদের। যাদেরকে আমরা অসময়ে পায়নি তারা আজ ছবি তোলার কাজে ব্যস্ত। যুবদল সব সময় মানুষের পাশে রয়েছে। যুবদলের কেউ কোনো অনৈতিক কাজ কিংবা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকলে তা বরদাস্ত করা হবে না। তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হবে। যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যুবদল বদ্ধপরিকর। আমাদেরকে ঐক্যমতে আসতে হবে।
যত সমস্যাই থাকুক এক সাথে বসে যুবদল সব সমস্যার সমাধান করবে।