কেলেঙ্কারী ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন

ইসলামপুর ( জামালপুর) প্রতিনিধি: জামালপুরের ইসলামপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও সহকারী হিসাব রক্ষক তাসলিমার অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন করেছে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে কলেজ মাঠে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ঘন্টাব্যাপি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জোবায়েদুল ইসলাম, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আহসান হাবিব রাজা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগীয় প্রধান মোরাদুজ্জামান, ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ নুরে আলম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক যোগদানের পর থেকেই দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, মনগড়াভাবে ভূয়া বিল ভাউচার এর মাধ্যমে অর্থ আত্নসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষক-কর্মচারীদের এসি আর খারাপ দেওয়ার হুমকি এবং চাকুরিচ্যুত করার ভয়ভীতি দেখানোসহ শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বিধি বহির্ভূত অর্থ আদায়ের দায়ে অধ্যক্ষকে প্রত্যাহার এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার চেয়ে অপসারণের দাবী জানান।

পরে প্রশাসনিক ভবনে বিক্ষুব্ধ সকল শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা অধ্যক্ষের অফিস ও বাসভবনে তালাবদ্ধ করে রাখেন। সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা প্রদান করা হয়। পরে অবরুদ্ধ কলেজের সহকারী হিসাবরক্ষক তাসলিমা আক্তারকে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় বের করে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১১ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী ভূতপেক্ষা নিয়োগ চাকুরী স্থায়ীকরনের ক্ষেত্রে টালবাহনা এবং নিপীড়নেরও অভিযোগ উঠেছে কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুর রাজ্জাক এর বিরুদ্ধে । জানা গেছে, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ তাঁদের চাকুরী স্থায়ীকরনের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর যে আবেদন করেছেন, উক্ত আবেদনে অধ্যক্ষের সুপারিশ এবং প্রেরিত তথ্যাদি অধ্যক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত হতে হয়। বর্তমানে কর্মরত অধ্যক্ষ স্বাক্ষর দিব-দিচ্ছি বলে নানা অজুহাতে কালক্ষেপন আর টালবাহানা করছেন। অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সরকারি কলেজ-৫ শাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা থেকে উপ-সচিব মোসাঃ রোকেয়া পারভীন স্বাক্ষরিত পত্রে “সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮” এর ৭(৩) এ বর্ণিত বিধি মোতাবেক প্রযোজ্য শিক্ষকদের চাকুরী স্থায়ীকরনের প্রস্তাব দ্রুততম সময়ে প্রেরণের জন্য নির্দেমক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।” পদটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়কে বিগত ৬ মে ২০২৪ স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৮৫.১৫.০১৫(এ)২৩-৪১০ মূলে প্রেরন করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বর্তমানে কলেজে কর্মরত কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী প্রতিনিয়ত অধ্যক্ষের রুঢ় আচরণে অতিষ্ঠ বলে জানান। কিন্তু এ.সি.আর এর ভয়ে তারা মুখ খুলেন না। এমতাবস্থায় পতিত সরকারের আমলে নিয়োগকৃত স্বেচ্ছাচারী অধ্যক্ষকে অবিলম্বে অপসারনের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের আশু সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক- কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুর রাজ্জাককে তার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *