আকষ্মিক ঝড় ও বজ্রপাতে দুইজন নিহত, কয়েকটি এলাকায়  বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়িতে আকস্মিক ঝড় ও বজ্রপাতে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়সহ বিভিন্নস্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে বজ্রপাতে জেলায় দুইজন নিহত এবং জেলায় প্রশাসনের কার্যালয়ের এক স্টাফসহ চারজন আহত হয়েছে। ঝড়ের কারণে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পুরো জেলা অন্ধকারে ডুবে রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হঠাৎ বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পর প্রচন্ড ঝড় বইতে শুরু করে,তার সাথে বজ্রপাত। ঝড়ে জেলা সদরের মুসলিম পাড়া, বাস টার্মিনাল সড়ক, নিউজিল্যান্ড, আলুটিলা,অনন্ত মাস্টার পাড়া,নারানখাইয়া এলাকাসহ কয়েকটিস্থানে গাছ উপড়ে পড়ে এবং অনেকের ঘরে চালের টিন উড়িয়ে নিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকেরই ঘরবাড়ি।

এ সময় বজ্রপাতে আলুটিলার অচাই পাড়া এলাকায় ভুগীরণ ত্রিপুরা নামে একজনের মৃত্যু হয়। পাহাড় থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বজ্রপাতে শিকার হলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়াও জেলার মহালছড়িতে বজ্রপাতে একজন নিহত ও চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ীতে ফিরে গেছে। গুরুতর আহতদের চিকিৎসা চলছে।

এদিকে বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ও বজ্রপাতে গাছ পড়ে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের দুটি এসি নষ্ট, জানালার গ্লাস ভেঙে গেছে। টিনশেড গাড়ি রাখার পার্কিংয়ের উপর গাছ ভেঙে পড়ে অফিস স্টাফদের  ৪টি মোটরসাইকেল, এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) সরকারি ব্যবহৃত জীপ গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ১জন আহত হয়েছে। খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া জানান,সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎ ঝড়ে গাছ ভেঙ্গে পড়ে ক্ষতির খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে যায়। এ সময় বাস টার্মিনাল এলাকা,জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গাড়ী শেডের উপরে ঝড়ে ভেঙ্গে পড়া গাছগুলো সরিয়ে মোটর সাইকেল,গাড়ীগুলো উদ্ধার করি। জেলা সদরে বেশ কয়েকটি স্থানে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। 

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার জানান, ঝড়ো বাতাস ও বজ্রপাতের কারণে বিভিন্নস্থানে গাছ, গাছের ডালপালা ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইনের উপর পড়ায় সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় । কিছু জায়গায় সঙযোগ তারও ছিড়ে গেছে। লাইন চেকিংয়ের কাজ শুরু করা হয়েছে। জেলা শহরের কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু করা সম্ভব হলেও,ঝড়ে ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনন্ত মাস্টার পাড়া,ইসলামপুর,পেরাছড়াসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনো বিদ্যুৎ চালু করতে করতে পারেনি।এসব এলাকায়  বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে সময় লাগবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সঞ্চালন লাইন চালু করতে আমাদের টিম চেষ্টা করে যাচ্ছে। আশা করছি বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব জায়গায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন সচল হবে।

প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, ঝড়ো হাওয়া, বজ্রপাত ও গাছ পড়ে জেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে আনার পর তাদের টিম উদ্ধার কাজ করেছে। প্রায় দুই ঘন্টার কাছাকাছি উদ্ধার করে গাড়ী পার্কিং শেডের উপর ভেঙ্গে পড়া গাছগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। আমাদের স্টাফদের ৩-৪টি মোটর সাইকেল ও গাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন এসেও কাজ করেছিলো। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *