পার্বত্য চুক্তি নিয়ে জেএসএস ও পিসিএনপি’র পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি পালন 

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :

খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চুক্তি ২৭তম বর্ষপূর্তিকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(জেএসএস) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ(পিসিএনপি) পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি পালন করেছে। খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে স্লোগান ছিল”পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলুন”।

সোমবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র উদ্যোগে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মিলনপুরস্থ মারমা উন্নয়ন সংসদের হলরুমে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র কেন্দ্রীয় কমিটি’র সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’র কেন্দ্রীয় কমিটি’র সভাপতি বিমল কান্তি চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান। বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ টানা সাড়ে ১৫বছরের অধিক ক্ষমতায় থাকলেও চুক্তি বাস্তবায়ন না করে উল্টো চুক্তির

শর্ত লঙ্ঘন করে কালক্ষেপন করেছেন। অন্যদিকে পাহাড়ে বিগত ২৭বছরে ভাতৃঘাতি সংঘাত,হত্যাযজ্ঞসহ পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে নীল নকশা তৈরি করছে একটি মহল। বিগত সরকারের আন্তরিকতার অভাবে ২৭বছরেও পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে এখনও প্রকৃত শান্তি ফিরে আসেনি। আমরা দ্রুত পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

সমাবেশে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুভাষ কান্তি চাকমা,সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা ও ইউপিডিএফ গণতন্ত্রিকের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক মিটন চাকমাসহ আরও অনেকে৷ অন্যদিকে খাগড়াছড়ি শহরের এফএনএফ রেস্টুরেন্টে চট্টগ্রাম সংবাদ সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মুহা: লোকমান হোসাইন বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিকে সংবিধান বিরোধী ও বৈষম্যমূলক দাবী করে চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন,পাহাড়ে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থতার অভিযোগে আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান অপসারণ,পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্বার ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প পুনঃস্থাপনের দাবী জানান।

সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ২৩৮টি নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোকে ৩০ বিভাগ হস্তান্তর করা হয়েছে, পক্ষান্তরে চুক্তির পর পাহাড়ে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছে। চলছে অস্ত্রের মহড়া। বছরের পাহাড়ে কয়েকশত কোটি টাকার চাঁদাবাজি হচ্ছে।

পাহাড়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের নির্মূলের দাবিও জানান তারা।

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডালিম, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি মো: নিজাম উদ্দিন, সাধারন সম্পাদক এস এম মাসুম রানা, কেন্দ্রীয় যুব পরিষদের সভাপতি আসাদ উল্লাহ ও ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মো: সুমন মিয়া,মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালমা আহমেদ মৌ,মহিলা পরিষদের জেলা প্রতিনিধি হাসিনা বেগমসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *