সুন্দরবনে ক্যামেরায় ধরা পড়ল ২১টি বাঘ শাবক।

মোঃ ইমরান, বরিশাল

পাঁচ বছরে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১টি বেড়ে ১২৫টিতে দাঁড়িয়েছে। ক্যামেরা ট্রাপিংয়ে ৫৯ শতাংশ অর্থাৎ অন্তত ৭৩টি বাঘের অবস্থান শনাক্ত হয়েছে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন অংশে। ২১টি বাঘ শাবকের ছবিও মিলেছে ক্যামেরায়।চলতি মাসের ৮ অক্টোবর প্রকাশিত বাঘ গণনার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আবার সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু হয়। ৬০৫টি গ্রিডে একহাজার ২১০টি ক্যামেরায় ৩১৮ দিন পর্যবেক্ষণ শেষে ২০২৪ সালের মার্চে বাঘ গণনার শেষ হয়। ক্যামেরায় ধরা পড়া ছবি পরীক্ষা করে ১২৫টি বাঘ পাওয়া যায়। এর আগে ২০১৫ সালের গণনায় ১০৬টি বাঘ এবং ২০১৮ সালের গণনায় ১১৪টি বাঘের খোঁজ পাওয়া যায়। সে হিসেবে ৩ বছরে ৮টি এবং পরের ৫ বছরে ১১টি বাঘ বেড়েছে।

এবার মা বাঘের সঙ্গে ২১টি শাবকের ছবি ধরা পড়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের গণনায় পাঁচটি বাঘ শাবকের ছবি পাওয়া যায়। তবে শাবকের মৃত্যুর হার বেশি বলে বরাবরের মতোই এগুলো গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাঘ শাবকের মৃত্যুর হার বেশি এগুলো গণনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনে দুই বছর ধরে চলা বাঘ গণনার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ বিশ্ববাঘ দিবসে (৩০ জুন) ঘোষণার কথা থাকলেও দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে এবারের ফলাফল দেরিতে ঘোষণা করা হয়েছে।’ তিনি জানান, সুন্দরবনকে তিনটি ব্লকে ভাগ করে বাঘ গণনার কার্যক্রম চালানো হয়। ব্লকগুলো হচ্ছে— শরণখোলা-চাঁদপাই, খুলনা ও সাতক্ষীরা ব্লক। এর মধ্যে শরণখোলা রেঞ্জ ও চাঁদপাই এলাকার বনে ৫০টি বাঘ পাওয়া যায়।পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, ‘সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জে এক বাঘিনীর সঙ্গে চারটি শাবক দেখা গেছে।’বর্তমান বিশ্বে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বাঘ। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কয়েকটি দেশে তিন হাজার ৮৪০টি বাঘ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। এবিষয়ে শরণখোলা সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠনের সভাপতি আব্দুল অদুদ আকন বলেন, বিষ প্রয়োগ করে মাছ শিকার কমায় এবং বাঘের খাবার হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে।পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করীম বলেন, ‘সুন্দরবনে বাঘের মূল খাবার হরিণসহ অন্য খাবার ও বাঘের আবাসস্থল অনুকূলে থাকায় এখানে বাঘ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *