পটুয়াখালীতে সাবেক মন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের হস্তক্ষেপ দাবি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:  

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মরহুম এডভোকেট শাহজাহান মৃধার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসৎ উপায়ে বিপুল অর্থ-বিত্ত অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুক আইডি “রাজ কাহন” থেকে দেওয়া একটি পোস্টে অভিযোগ করা হয় যে, পরিবারটি ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।

৫ আগস্ট ২০২৪-এ ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত চলে যান। দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন করেন। এই অস্থিরতার মধ্যে, শাহজাহান মৃধার পরিবারের বিত্তবৈভব এবং তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নতুন করে সামনে আসে।

“রাজ কাহন” আইডির পোস্টে দাবি করা হয়, মরহুম শাহজাহান মৃধা পটুয়াখালী আওয়ামী লীগকে পারিবারিক ও হাইব্রিড নেতৃত্বের অধীনে রেখে দলের ত্যাগী নেতাদের দূরে সরিয়ে রাখেন। দলের দুর্দিনে তার পাশে থাকা ত্যাগী নেতাদের সঠিক মর্যাদা দেননি, বরং নিজ পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। উল্লেখ করা হয়, তার ছেলে ও ছেলের বউয়ের সম্পদের পরিমাণ এখন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে এবং তারা ঢাকা, পটুয়াখালী, এমনকি ইতালিতেও সম্পত্তির মালিক।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর সিকদার মন্তব্য করেন, “পটুয়াখালীতে এই পরিবার থেকেই আওয়ামী লীগের ধ্বংসের শুরু।” এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মরহুম শাহজাহান মৃধার পরিবারের সদস্যরা জাহাঙ্গীর সিকদারের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ উত্থাপন করেন এবং অর্থ লেনদেনের কটাক্ষও করেন। রনি মৃধা জাহাঙ্গীরের চিকিৎসার জন্য প্রায় তিন লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন।

মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা লাইজু আপার বরাদ্দ এবং আফজাল হোসেনের উদার নেতৃত্বের সময়ে ত্যাগী কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বিতরণ করা হলেও, মরহুম শাহজাহান মৃধা বা তার পরিবারের কাছ থেকে তেমন কোনো সুবিধা পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। জাহাঙ্গীর সিকদারসহ বিভিন্ন নেতার বক্তব্যে উঠে আসে, শাহজাহান মৃধা তার ক্ষমতাকালীন সময়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের প্রতি উদাসীন ছিলেন, বরং নিজের পুত্রদের আর্থিক এবং রাজনৈতিক শক্তি বৃদ্ধিতে মনোযোগী ছিলেন।

দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে, পটুয়াখালী আওয়ামী লীগ এখন তীব্র সমালোচনার মুখে। সাবেক মন্ত্রীর পরিবারের সম্পদ অর্জনের বিষয়টি নিয়ে ত্যাগী কর্মী, ঠিকাদার, স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ জনগণের মধ্যেও অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *