পার্বত্য উপদেষ্টা ও যুগ্ম-সচিব অপসারণসহ চার দফার দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রিপুরা ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রতি চরম প্রশাসনিক ও উন্নয়ন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম-সচিব কংকন চাকমার অপসারণ দাবি করেছে ‘ত্রিপুরা-মারমা সচেতন সমাজ’।

সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সরব ও সজাগ সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক রুমেল মারমা।

সচেতন মারমা সমাজের প্রতিনিধি রুমেল মারমা বলেন—“বৈষম্যহীন, প্রতিনিধিত্বমূলক একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নে আমরা পথ চলেছিলাম। কিন্তু আজ পার্বত্য মন্ত্রণালয় হয়ে উঠেছে একচেটিয়া কর্তৃত্বের প্রতীক। এখানে ত্রিপুরা-মারমা জাতিগোষ্ঠীর জন্য নেই ন্যায্য অধিকার, নেই ন্যূনতম সম্মান।”

তিনি অভিযোগ করেন, বরাদ্দ, প্রকল্প, প্রশাসনিক পদ—সবখানেই চলছে পক্ষপাত ও গোষ্ঠীগত আধিপত্য, যার ফলে পাহাড়ি সমাজে তৈরি হয়েছে প্রবল অসন্তোষ ও হতাশা।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত চার দফা জোরালো দাবি:

১️.সুপ্রদীপ চাকমাকে উপদেষ্টার পদ থেকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
২️.কংকন চাকমাকে যুগ্ম-সচিব পদ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
৩️. পার্বত্য তিন জেলায় প্রকল্প ও বরাদ্দ ‘ন্যায্যতা ও সংবেদনশীলতা’র ভিত্তিতে বণ্টন করতে হবে।
৪. আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ, এবং টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান পদে মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন—“গোষ্ঠীভিত্তিক একচেটিয়া দখলদারিত্ব ও প্রশাসনিক বৈষম্য পার্বত্য অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নকে চরমভাবে ব্যাহত করছে। সময় এসেছে—সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি সুবিচার করার।”

তারা জানান, সরকার যদি এসব দাবি আমলে না নেয়, তাহলে তারা বৃহত্তর গণআন্দোলনের পথে যাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কার্বারী সূর্য কিরণ ত্রিপুরা, প্রশান্ত ত্রিপুরা, ম্রাচাই মারমা, উক্রাচিং মারমা, চিংলামং মারমা, মিনুচিং মারমা, সীমা ত্রিপুরা, তনয় ত্রিপুরা প্রমুখ।

এই সংবাদ সম্মেলন ছিল না শুধু ক্ষোভ প্রকাশের একটি অনুষ্ঠান—বরং এটি ছিল বহুদিন ধরে নিপীড়িত এক জনগোষ্ঠীর আত্মচিৎকার, রাষ্ট্রীয় অবহেলার বিরুদ্ধে এক বাস্তব, তীব্র প্রতিবাদ।

এখন দেখার বিষয়—সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল এ দাবি কতটা গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয়, নাকি আরও একটি ন্যায়সংগত আহ্বান হারিয়ে যাবে নীরবতা আর উপেক্ষার অতলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *