
ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি: আলিফ লায়লা একটি জনপ্রিয় ভারতীয় টেলিভিশন ধারাবাহিক, যা ‘আরব্য রজনীর’ গল্প অবলম্বনে নির্মিত। এই ধারাবাহিকটি ‘আরব্য রজনীর’ বিভিন্ন বিখ্যাত চরিত্র ও কাহিনীর উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে, যেখানে জিন, জাদুকর, উড়ন্ত কার্পেট এবং অন্যান্য কল্পিত ঘটনার চিত্রায়ন করা হয়েছিল। আলিফ লায়লার মতো জিনের বাদশা সেজে ভুয়া জিন দ্বারা কবিরাজি চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে আসছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া গ্রামের ভন্ড জিনের বাদশা ফজলু হক আকন্দ।
তার ভুয়া কবিরাজের খপ্পরে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এ ঘটনায় প্রতারণার স্বীকার লোকজনসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ফজলু হক ভুয়া জিনের বাদশা সেজে জিন হাজির করার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সরলমনা মানুষকে সর্বস্বান্ত করে ফেলেছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, সাধারণ মানুষদের ফাঁকি দিতে এবং নিজেকে বাঁচাতে বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে ওই ফজলু হক দীর্ঘদিন যাবত ভুয়া জিনের বাদশা সেজে সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করছে। সে কিছুদিন আগেও একটি বাজারে দর্জি কাজ করত। তার কিছুই ছিল না। সে কবিরাজির নাম করে ভুয়া জিনের বাদশা সেজে চিকিৎসার নাম করে প্রতারণা করছে।
জানাযায়, ফজলু হক কবিরাজির চিকিৎসার নাম করে দীর্ঘদিন যাবৎ সাধারণ মানুষকে বোকা বানিয়ে ভুয়া জিনের বাদশা সেজে সংসারে অশান্তি, স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব,বন্ধ্যাত্ব, পছন্দের মানুষকে পাইয়ে দেওয়া, অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করা, ভানমারা ও কালো যাদুসহ নানাবিধ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রতারণার অংশ হিসেবে তার বাড়িতে আসা লোকজনদের নিয়ে জিন হাজির করার কথা বলে প্রথম নজরানা হিসেবে প্রত্যেকজনের কাজে ২০০ টাকা নেন। পরে জিনের বাদশা সেজে জিন হাজির করে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা লোকজনদের কাছ থেকে ৮-১০ হাজার টাকার নেন। তারপর জ্বিনের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান, তাবিজ-কবজ তুলে ফেলার মিথ্যা প্রতারণা করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভোক্তভোগী জানান, অনেক দিন আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে আলিফ লায়লা নামে একটি ধারাবাহিকে দেখেছিলাম জিনের বাদশা মালিকা হামিদা জিন হাজিরের মাধ্যমে তার বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতেন। যখন আমি তার কাছে কবিরাজি চিকিৎসা নিতে যাই সে তার ঘরে জিন হাজির করে। যখন জিন হাজির করে তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিল ঘরটি চারিদিকে দুলছে। আমি সেটা দেখে অবাক হয়েছিলাম। পরে দেখি এটি তার প্রতারণার ফাঁদ। সে তার প্রতারণা ফাঁদে ফেলে আমার কাছ থেকে চিকিৎসার নামে অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এ যেন কল্প কাহিনী আলিফ লায়লাকেও হার মানিয়েছে।
এলাকাবাসী ভুয়া জিনের বাদশা ফজল হককে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
